The Court Room

Author name: newsportal

আন্তর্জাতিক

ফিলিপাইনে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এআই ও ভুয়া তথ্য

প্রতীকী ছবি ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতার্তেকে মার্চে যখন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেফতার করে, তখন তার মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত ভাইয়ের ন্যায়বিচারের দাবিতে স্থানীয় টেলিভিশনে কথা বলেছিলেন শীরাহ এসকুয়ের্দো। কিন্তু কয়েকদিন পরই ফেসবুকে ভাইরাল হয় একটি এআই-উৎপাদিত ভিডিও, যেখানে দেখা যায় এসকুয়ের্দোর নিহত ভাই এফ্রাইম বেঁচে আছেন এবং বোনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলছেন। ভিডিওটিতে কম্পিউটার-উৎপাদিত এফ্রাইমকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি বেঁচে আছি, মরিনি। তোমাকে কি এর জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে?’ দুতার্তের অনুসারী এক ইনফ্লুয়েন্সার এই ভিডিও পোস্ট করার পর তা হাজার হাজার দর্শক পায় এবং ‘ভুয়া মাদকযুদ্ধের শিকার’ বলে মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে এসকুয়ের্দো প্রতিদিন ঘৃণামূলক বার্তার শিকার হচ্ছেন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন শত শত নোটিফিকেশন আর ঘৃণার বার্তা নিয়ে ঘুম থেকে উঠি। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো, অনেকেই এগুলো সত্যি বলে বিশ্বাস করছে।’ রাজনৈতিক বিভাজন ও ডিজিটাল প্রপাগান্ডা মার্চে দুতার্তের গ্রেফতারি ফিলিপাইনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে তার তিক্ত ক্ষমতার লড়াইয়ের মধ্যে ঘটে। উভয় পক্ষের সমর্থকরা এখন ডিজিটাল মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও বিকৃত ছবি ছাড়াও এই প্রচারণায় এআই-উৎপাদিত কনটেন্টের ব্যবহার বেড়েছে। মার্কোস জুনিয়র ও দুতার্তে পরিবার অতীতে ভুয়া তথ্যের প্রচার কৌশল ব্যবহার করেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ভুয়া তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে দুতার্তে পক্ষের ভূমিকা বেশি। ম্যাস মিডিয়া বিশেষজ্ঞ দানিলো আরাও বলেন, ‘দুতার্তে পরিবার তাদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠন করতে চাইছে, আর এর জন্য তারা তথ্য বিকৃত করতে পিছু হটবে না।’ ভুয়া ভিডিও ও জনমত সম্প্রতি দুতার্তে পরিবারের পক্ষে তৈরি করা এআই-ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। জুনে দুতার্তে-ঘনিষ্ঠ এক সিনেটর ৮.৬ মিলিয়ন ভিউ পাওয়া একটি এআই ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে ডেপুটি-প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তের বিরুদ্ধে ‘নির্বাচিত বিচার’ নিয়ে সমালোচনার জবাব দেওয়া হয়। ডেপুটি-প্রেসিডেন্ট এ ভিডিওকে সমর্থন করে বলেন, ‘লাভের উদ্দেশ্যে না হলে এমন ভিডিও শেয়ার করতে কোনো সমস্যা নেই।’ কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি আসলে ভুয়া তথ্যকে স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা। জনমত ও এআই ব্যবহার জুনে প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, ফিলিপাইনের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ এখন ভুয়া তথ্য নিয়ে আগের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে, এ বছরের মার্চে পরিচালিত জরিপে অন্তত ৫১ শতাংশ মানুষ চায় দুতার্তেকে তার অভিযোগের জন্য বিচারের মুখোমুখি করা হোক, এবং ৬৬ শতাংশ মানুষ সারা দুতার্তের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তার অভিশংসন প্রক্রিয়ার দাবি জানিয়েছে। ফিলিপাইনের নির্বাচনের আগে এআই ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর হার বেড়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সময়ে যেসব ভুয়া দাবি ছড়ানো হয়েছে, তার এক তৃতীয়াংশের পেছনে ডিপফেক প্রযুক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার দেখা গেছে। নীতি ও চ্যালেঞ্জ ডেটা অ্যান্ড এআই এথিকস পিএইচ-এর নির্বাহী পরিচালক কার্লজো হাভিয়ের বলেন, ‘এটি এআই-এর নয়, বরং মানব আচরণের সমস্যা। ভুয়া তথ্য ছড়ানোর এই অপচেষ্টা এআইকে ব্যবহার করে আরও জটিল হয়েছে।’ তিনি বলেন, দেশের রাজনীতিকদের এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে নীতি প্রণয়নে উদ্যোগী হওয়া উচিত। তবে তাদের অনেকে যেহেতু এর সুবিধাভোগী, তাই বাস্তবে কতটা উদ্যোগী হবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ফিলিপাইন  এআই  মাদকবিরোধী অভিযান

আন্তর্জাতিক

সিরিয়ার সংহতির প্রতি সৌদি আরবের সমর্থন, ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা

প্রতীকী ছবি সিরিয়ার সংহতির প্রতি সৌদি আরবের সমর্থন, ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও সংহতির প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছে সৌদি আরব, একইসঙ্গে সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরাইলের অব্যাহত হামলার নিন্দা করেছে দেশটি। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে রিয়াদ এবং দেশের বিভিন্ন অংশে নিরাপত্তা, শান্তি ও রাষ্ট্রের পূর্ণ কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সিরিয়ার সরকারের নেওয়া পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছে। বিবৃতিতে সৌদি আরব ইসরাইলের ‘স্পষ্ট আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন’ এবং ১৯৭৪ সালের বিচ্ছিন্নকরণ চুক্তি ভঙ্গের ঘটনাকে নিন্দা করে জানায়, ইসরাইলের বারবার হামলা এবং সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ সিরিয়ার সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করছে। সৌদি আরব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সিরিয়ার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং অব্যাহত হামলার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার দাবি করেছে। এ নিন্দা এমন সময়ে এলো, যখন ইসরাইল দক্ষিণ সিরিয়ার সুয়াইদা প্রদেশ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের দারা অঞ্চলে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, ইসরাইলি যুদ্ধবিমান সুয়াইদা শহরে একাধিক হামলা চালিয়েছে। তবে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়নি। ইসরাইলের আর্মি রেডিও জানিয়েছে, সুয়াইদা শহরের ভেতরে একটি সিরিয়ান ট্যাঙ্কে আঘাত হানা হয়েছে এবং দারার ইজরা শহরের উপকণ্ঠে আরও বিমান হামলা চালানো হয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে সিরিয়ার সামরিক বহর, ট্যাঙ্ক ও রকেট লঞ্চার সিস্টেমে হামলা চালানো হয়েছে, যাতে তাদের গতিবিধি ব্যাহত করা যায়। এই হামলা আসে ঠিক তখন, যখন সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরা স্থানীয় দ্রুজ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর সুয়াইদায় পূর্ণ যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে সিরিয়ার সেনাবাহিনী ওই এলাকা থেকে ভারী অস্ত্র সরিয়ে নিচ্ছে এবং স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হচ্ছে। এর আগে সোমবার সুয়াইদায় সশস্ত্র বেদুইন যোদ্ধা ও দ্রুজ মিলিশিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষে ৩০ জনের বেশি নিহত এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছে বলে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়। সিরিয়া  সৌদি আরব  ইসরাইল

জাতীয়

‘দ্য নিউজ ২৪ ডটকম’ নিবন্ধন পেল

ফাইল ছবি জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক নিবন্ধন পেয়েছে ডিজিটাল ও মাল্টিমিডিয়া ভিত্তিক অনলাইন সংবাদপোর্টাল ‘দ্য নিউজ ২৪ ডটকম’। রোববার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৭ (সংশোধিত ২০২০) অনুসারে ‘দ্য নিউজ ২৪ ডটকমকে’ নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এর আগে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিক অনুমোদন দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। পরে নির্ধারিত ফি সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর, দ্য নিউজ কর্তৃপক্ষের হাতে নিবন্ধন সনদ হস্তান্তর করা হয়। তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত ওই সনদে উল্লেখ করা হয়েছে— সরকার নির্ধারিত সব শর্তাবলী মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকবে এ অনলাইন গণমাধ্যমের। ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ‘সারাদেশে সবার সাথে’ স্লোগানে যাত্রা শুরু করে ‘দ্য নিউজ ২৪ ডটকম’। শুরু থেকেই একঝাঁক তরুণ, মেধাবী ও পেশাদার সংবাদকর্মী এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছে। পোর্টালটি তথ্যের স্বাধীনতা, জনস্বার্থ ও পেশাদার সাংবাদিকতার মানদণ্ড বজায় রেখে সঠিক সংবাদ পরিবেশনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঢাবি উপাচার্যের সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। ছবি: বাসস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করেছেন।  মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়মিত অবহিতকরণের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপাচার্য এই সাক্ষাৎ করেন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ডাকসু নির্বাচন বিষয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও স্থাপনা নির্মাণসহ একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা বৃহৎ প্রকল্পসমূহের কাজ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন।  এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও জোরদার করতে তিনি সরকারি অনুদান বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতা চান। উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্য সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতি কামনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রধান উপদেষ্টা  ড. মুহাম্মদ ইউনূস  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

জাতীয়

নারী নির্যাতনের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

ছবি: সংগৃহীত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২০২১ সালে এক নারীকে লাঞ্ছিত করার ভিডিওকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ের ঘটনা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট। বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানিয়েছে, ‘নারী নির্যাতনের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের।’ তারা আরও জানায়, এক নারীকে মারধরের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে, এটি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শাসনামলে বাংলাদেশের ঘটনা। বাংলাফ্যাক্ট যাচাই করে দেখেছে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনায় ২০২১ সালের ভিডিও। আলোচিত দাবিটি যাচাইয়ে ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৯ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কামারহাটি এলাকায় একটি ক্লাবের ভেতরে তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতার সহযোগীরা ওই নারীকে লাঞ্ছিত করে। পরে ঘটনাটির ভিডিও প্রকাশিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সূত্রে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ঘটনাটি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আড়িয়াদহ তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবে ঘটেছিল এবং সেসময় এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া ভারতের নিউজ ১৮, ইটিভি ভারত, ইন্ডিয়া টিভিসহ একাধিক গণমাধ্যমেও একই ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে বলে জানায় বাংলাফ্যাক্ট। পশ্চিমবঙ্গে নারীকে মারধরের পুরনো ভিডিও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শাসনামলে বাংলাদেশের বলে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর বলে প্রমাণ পেয়েছে বাংলাফ্যাক্ট। বাংলাদেশে চলমান গুজব, ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে দায়িত্ব পালন করছে বাংলাফ্যাক্ট।

জাতীয়

‘পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসা করতেন সোহাগ’

ছবি: সংগৃহীত মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে পাথর মেরে হত্যা করা ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসা করতেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন মো. নজরুল ইসলাম। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ডিএমপির কর্মকর্তা বলেন, হাজী সেলিমের ভাতিজা পিল্লু কমিশনারের ছত্রছায়ায় বিগত ১৭ বছর অ্যালুমেনিয়ামের পল্লী বিদ্যুতের তারের ব্যবসা করতেন সোহাগ। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড হয়নি। লাল চাঁদ আগের সরকারের সময়ে পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসা করতেন। পটপরিবর্তনের পর আরেকটা গ্রুপ এই ব্যবসায় জড়িয়ে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়। দুই দলই আগে থেকে পরস্পরকে চিনত। ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঘটনা চলাকালে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে খবর পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মবের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছেন। ‘চাঁদাবাজদের জায়গা নাই, ব্যবসায়ীদের ভয় নাই’ এমন স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে মহিন ও পাশের এলাকা থেকে রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাথর নিক্ষেপকারী দুজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, দেশের যেকোনো নাগরিকের রাজনৈতিক পরিচয় থাকতেই পারে। সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ডিএমপি নিউজ

সারাদেশ

আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার

চান্দিনা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুল ইসলামকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার দিকে চান্দিনা পৌরসভার মহারং পশ্চিম পাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি মহারং গ্রামের হাজী আলী মিয়ার ছেলে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানা এবং উত্তরা থানায় একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়া কুমিল্লার চান্দিনা থানায়ও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এর আগে মো. মফিজুল ইসলাম ২০১৬ সাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে আসেন তিনি। এর পর চান্দিনা উপজেলা যুবলীগ এবং পরবর্তীতে ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি চান্দিনা পৌর আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে।  কুমিল্লা

সারাদেশ

নাম না থাকলেও পাশ, শূন্য পেলেও লাইসেন্স!

সোমবার গাজীপুর বিআরটিএ কার্যালয়ে হঠাৎ ছদ্মবেশে এসে দিনব্যাপী অভিযান। ছবি: যুগান্তর ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় নাম না থাকলেও পাশ, এমনকি শূন্য পেয়েও উত্তীর্ণ দেখিয়ে লাইসেন্স প্রদানের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  সোমবার গাজীপুর বিআরটিএ কার্যালয়ে হঠাৎ ছদ্মবেশে এসে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে এসব তথ্য উদঘাটন করেন দুদক, গাজীপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনামুল হক। তিনি জানান, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) গাজীপুর কার্যালয়ে ঘুস ছাড়া কোনো সেবা পাওয়া সম্ভব নয় এমন একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় নির্দেশেয় এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে দেখা যায়, ড্রাইভিং পরীক্ষার খাতায় কোনো প্রার্থীর নাম না থাকলেও তাকে পাশ দেখানো হয়েছে। আবার কেউ কেউ শূন্য (০) পেয়েও উত্তীর্ণ হয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী, ২০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অন্তত ১২ পেতে হয় পাশের জন্য। কিন্তু অভিযানে দেখা গেছে, অনেক পরীক্ষার্থী সেই মানদণ্ডে না পৌঁছালেও অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দালালদের সহায়তায় তারা পাশ করেছেন এবং লাইসেন্স পেয়েছেন।  এনামুল হক বলেন, ‘এটি শুধুমাত্র অনিয়ম নয়, জননিরাপত্তা নিয়ে খেলা। অদক্ষ চালকদের রাস্তায় নামার সুযোগ তৈরি হচ্ছে, যা প্রতিদিন সাধারণ মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। দুদকের এ অভিযানে লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের ক্ষেত্রে অন্তত ছয় ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।’ এনামুল হক আরও বলেন, ‘আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জব্দ করেছি এবং কিছু ফটোকপি পরে সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। সব তথ্য যাচাই করে তা কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠানো হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন বলেন, ‘বিআরটিএ গাজীপুর অফিসের কিছু অদক্ষ ও অনিয়মে জড়িত কর্মচারীর বিষয়ে আমরা এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ গাজীপুর

সারাদেশ

পুলিশকে পিটিয়ে হাতকড়াসহ পালাল সাবেক বিএনপি নেতা

কবির আহম্মদ চৌধুরী। ফেনীর ফুলগাজীর আমজাদহাটে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ কবির আহম্মদ চৌধুরী নামে এক আসামি পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দিবাগত রাতে কবিরের বাড়িতেই এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাগলনাইয়া থানার ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন।  আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন—উপপরিদর্শক (এসআই) রাফিদ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দিদার ও কনস্টেবল সুমন।  পলাতক আসামি কবির আহম্মদ চৌধুরী একটি নারী নির্যাতন মামলার আসামি। তিনি আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।  ছাগলনাইয়া থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত কবির আহম্মদ ছাগলনাইয়া থানায় করা একটি নারী নির্যাতন মামলার আসামি। মঙ্গলবার রাতে পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতারে তার বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায় তার স্বজনরা। পরে হাতকড়াসহ পালিয়ে যান কবির।  ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আসামির স্বজনদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। হ্যান্ডকাফসহ পালিয়ে যাওয়া ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। এদিকে ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখরুল আলম জানিয়েছেন, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের জন্য আগেই কবিরের সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়েছে। বিএনপি  ফেনী সম্পর্কিত খবর

জাতীয়

‘বিয়ের মেহেদী হাতেই প্ল্যাকার্ড ধরেছি, টিয়ারশেল খেয়েছি’

লামিয়া ইসলাম। ছবি: বাসস লামিয়া ইসলাম, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা। তিনি ছোটবেলা থেকেই রাজনীতি সচেতন। অনেক কম বয়সেই রাজনীতির জটিল বইগুলো অধ্যয়ন করেছেন। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক বর্ষে পড়ছেন এবং রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।  জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) বিশেষ আয়োজনে নেওয়া সাক্ষাৎকারে এই জুলাই সে সময়ের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তার মতামত তুলে ধরেছেন।  প্রশ্ন: নারী হিসেবে রাজনীতিতে আসায় কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন? লামিয়া ইসলাম: রাজনীতিতে এসেছি রাষ্ট্র ও শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের স্বপ্ন নিয়ে। আর এই সংস্কার কেউ এসে করে দেবে না, আমাদের নিজেদেরই সেই সংস্কার করতে হবে। জন্মের পর থেকে আমাদের দেশটাকে যে লুটপাট করা হয়েছে, বলা চলে তা ‘সাংবিধানিকভাবেই স্বীকৃত’। আইনের নানান ফাঁকফোকর ও মারপ্যাচই কাঠামোগতভাবে এই দেশের সরকারকে রাষ্ট্রের সেবক নয়, শোষকে পরিণত করেছে। ফলে এই পুরো ব্যবস্থাপনার সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।  রাষ্ট্রটাকে আক্ষরিক অর্থে জনগণের  করে গড়ে তোলার জন্য রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছি। আর আমি যখন রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত নিই, সেই সময়টা বাংলাদেশে চূড়ান্ত ফ্যাসিজমের সময়। কেউ তার নিজের অধিকারের পক্ষে কথা বলতে পারেন না। কেউ কথা বললেই, তাকে ভয়ভীতি দেখানো থেকে শুরু করে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।  প্রশ্ন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কীভাবে যুক্ত হলেন? লামিয়া ইসলাম: যেহেতু আমি আগে থেকেই রাজনীতির মাঠে লড়াই সংগ্রামে যুক্ত ছিলাম। রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের সাথে রাজনীতি করি। এর আগে আমরা আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে নানা সময়ে যুগপৎভাবে  রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছি। কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন শুরু হলো, তখন থেকেই এই আন্দোলনের নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিকভাবেই যুক্ত থেকেছি। আমরা বিশ্বাস করতাম, আমাদের ঐক্যবদ্ধতাই আওয়ামী জাহেলিয়াত থেকে আমাদের মুক্ত করবে। ফলে যখনই আমাদের এমন কোনো সুযোগ তৈরি হয়েছে, আমরা তাতে অংশ নিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এমনই একটি প্ল্যাটফর্ম যেখান থেকে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে। এই ছাতা আমাদের এক করেছিল।  আন্দোলনটা শুরু হয়েছিল জুনে। তখন থেকেই এতে যুক্ত থাকি। রাজপথে আসি, মিছিলে যুক্ত হই। নানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ রাখি।  এই আন্দোলন চলাকালেই আমার বিয়ে হয়। প্রশ্ন: বিষয়টি আপনি ফেসবুকে লিখেছেন, বিয়ের দুইদিন পরই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। লামিয়া ইসলাম: তথ্যে একটু ভুল আছে। আমি বিয়ের দুইদিন পর আন্দোলনে যুক্ত হইনি বরং বিয়ের জন্য দুইদিন বিরতি নিয়েছিলাম। আমি আন্দোলনের শুরু থেকেই ছিলাম। ১২ জুলাই আমার বিয়ে হয়। তার আগে আমি বিয়ের কেনাকাটা করে শপিং ব্যাগ হাতে নিয়েই মিছিল করেছি। ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছি। বিয়ে এবং তারপরের দিন আমি সশরীরে আন্দোলনের মাঠে থাকতে পারিনি। অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সরব ছিলাম। বিয়ের দুইদিনের মাথায় আর রাস্তায় না নেমে থাকতে পারিনি। আপনি নিশ্চয় জানেন, একজন নববধুর পক্ষে শ্বশুরবাড়ি থেকে এই সময়টা বের হওয়া কতটা কঠিন। ফলে আমাকে শ্বশুড়বাড়ি থেকে মিথ্যা অযুহাত দিয়ে বের হতে হতো। এ ব্যাপারে আমার বরের সহযোগিতা পেয়েছি। বিয়ের মেহেদী তখনও তরতাজা। টকটকে। ফ্যাকাশে হয়নি। অথচ আমি চলে গেছি মিছিলে। বিয়ের মেহেদী হাতেই প্ল্যাকার্ড ধরেছি, টিয়ার শেল খেয়েছি। এই আবেগ আসলে এখন বলে বোঝানো যাবে না। মুক্তির নেশা আসলে আপনার সামনের সবকিছুকে তুচ্ছ করে তুলবে। ওই সময়টা খুবই অস্থিরতার ভেতর দিয়ে গেছে। তখন পুলিশ ছাত্র দেখলেই তাদের মোবাইল ফোন চেক করতো। আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা দেখতো। তখন একটা কৌশল নেওয়া শুরু করি। বাসা থেকে যখন বের হতাম, ফোন ফ্ল্যাশ মেরে বের হতাম। আর একটা কাগজে নিজের নাম, মায়ের ফোন নম্বর, হাসবেন্ডের ফোন নম্বর ও বাসার ঠিকানা লিখে নিতাম। আমি তো জানি না, বেঁচে ফিরবো কিনা। দেখা গেল গুলি খেয়ে রাস্তায় আমার লাশ পড়ে আছে।  অন্তত লাশটা যেন আমার পরিবার পায়, এ জন্য এটা করতাম। প্রশ্ন: ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের সঙ্গে ছিলেন। জুলাইয়ের আন্দোলনে আপনার সেই অভিজ্ঞতাকে কীভাবে কাজে লাগিয়েছেন? লামিয়া ইসলাম: জ্বি, আমরা বেশ কয়েকটি সংগঠন মিলে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যে ছিলাম। কিন্তু জুলাই আসলে সবকিছু থেকে আলাদা ছিল। মানুষের ভেতর ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এখানে আসলে আমাদের আন্দোলনটাকে শুধু কন্টিনিউ করে যেতে হয়েছে; আর কিছু না। আমরা জানতাম, যদি আমরা মাঠে ঠিকমতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারি; তাহলে আরও বেশি মানুষ এতে অংশগ্রহণ করবেন। রাস্তায় নেমে আসবেন। ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের নির্যাতন-নিপীড়ন আর আন্দোলন দমনে তাদের যে দুর্বৃত্তায়ন- তা যেকোনো মানুষকেই ছুঁয়ে গেছে। মানুষ তার সন্তানকে রক্ষা করার জন্য মাঠে নেমেছে, বোন তার ভাইকে রক্ষা করার জন্য মাঠে নেমেছে। এই যে মানুষের স্রোত নামতে শুরু করেছিল, তা আটকানোর ক্ষমতা কারো ছিল না। আন্দোলনের ক্ষেত্রে সশস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে রুখে দাঁড়ানোটাই কাজে লেগেছে। আপনি সাহস করে দাঁড়িয়ে থাকবেন, দেখবেন আপনার সাথে এসে অনেকে দাঁড়িয়ে গেছে। আপনি তাদের ধাওয়া দিতে গিয়ে দেখবেন কোথা থেকে হাজার হাজার মানুষ এসে আপনার সাথে যুক্ত হয়েছে। প্রশ্ন: জুলাইয়ের কোন ঘটনা বা স্মৃতি কী আপনাকে বারবার নাড়া দেয়? লামিয়া ইসলাম: ২ আগস্ট শাহাবাগে একটা সংঘর্ষের মধ্যে পড়ি। সেখানে গুলি করা হচ্ছিল। আমার চোখের সামনেই দুইজন মানুষ রাস্তায় পড়ে গেল।  চোখের সামনে মৃত্যু। সেই দৃশ্য এখনো মনে পড়লে শিউরে উঠি। প্রশ্ন: রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে আপনারা (রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। এখন সেই সুযোগ এসেছে।  কেমন রাষ্ট্র দেখতে চান? লামিয়া ইসলাম: আমরা আসলে জনগণের রাষ্ট্র গড়তে চাই। এমন একটা রাষ্ট্র যেখানে সরকার আইনের ঊর্ধ্বে না বরং এমন আইন করতে হবে যেন যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের জবাবদিহিতে বাধ্য করা যাবে। ক্ষমতা কোনো একক ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত থাকবে না। যেন কেউ চাইলেই টাকা পাচার করতে না পারে, নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। নারী, পুরুষ, ধর্ম, বর্ণ, জাত নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য যেন একটি নিরাপদ দেশ গড়তে পারি। প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সরকার। মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। রাজনীতি থাকবে তবে তা যেন ক্যাডারভিত্তিক না হয়। ক্ষমতাবান হবেন নাগরিকরা। জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র কাঠামো নির্মাণ করতে পারলেই আমরা আসলে সত্যিকার অর্থে একটা নাগরিকবান্ধব রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে পারবো। প্রশ্ন: গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী? লামিয়া ইসলাম: গণঅভ্যুত্থানের একটি বড় প্রত্যাশা ছিল, রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন। পুরোনো ব্যবস্থাপনা বাতিল, জনবিরোধী বিধিবিধান বাতিল, ভেঙে ফেলা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন।  তবে এসবের বাস্তবায়ন খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। তবে সময় এখনো শেষ হয়নি। অবিলম্বে জুলাইয়ের আহতদের সার্বিক চিকিৎসা চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং জুলাই সনদ দিতে হবে।  সংবিধান ও আইনি কাঠামোর সংস্কার করতে হবে। ফ্যাসিবাদের বীজ যেখানে যেখানে আছে তা উৎখাত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সেইসাথে বর্তমান সরকারকেও তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে জনগণের সামনে জবাবদিহি করতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান  জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর

Scroll to Top